SEBA Class 10 Bengali Chapter (পদ্যাংশ) 5: "আবার আসিব ফিরে" কবি: জীবনানন্দ দাশ – Questions and Answers by Digital Pipal Academy
Digital Pipal Academy presents detailed and insightful solutions for SEBA Class 10 Bengali Chapter (পদ্যাংশ) 5: "আবার আসিব ফিরে", penned by the renowned poet জীবনানন্দ দাশ. Our solutions help students dive into the poetic beauty, themes, and imagery expressed in this iconic poem.
Get Free NCERT PDFs
If you want to download free PDFs of any chapter from any subject, click the link below and join our WhatsApp group.
(যদি তুমি যেকোনো বিষয়ের বিনামূল্যে PDF ডাউনলোড করতে চাও তাহলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করো এবং আমাদের WhatsApp গ্রুপে যোগ দাও)
Join Our WhatsApp Group
Prepared as per the Assam State Board syllabus for 2025-2026, these answers cover all critical questions, enabling students to gain a deeper understanding of the poem while improving their exam performance. With our step-by-step guidance, students can write precise and impactful answers. Trust Digital Pipal Academy for the best educational support!
SEBA Class 10 Bengali Chapter (পদ্যাংশ) 5: -
ক্রিয়াকলাপ
২। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
(ক) “আবার আসিব ফিরে” কবিতাটির কবি কে?
উত্তরঃ “আবার আসিব ফিরে” কবিতাটির কবি হলেন
জীবনানন্দ দাশ।
(খ) কবিতাটি
কোন কাব্যের অন্তর্গত?
উত্তরঃ “আবার আসিব ফিরে” কবিতাটি “রূপসী বাংলা” কাব্যগ্রন্তে
অন্তর্গত।
(গ) ‘কবি জীবনানন্দ দাশ’ রচিত প্রধান কাব্যগ্রন্থটির নাম কী?
উত্তরঃ কবি জীবনানন্দ দাশের রচিত
প্রধান কাব্যগ্রন্থটির নাম “বনলতা সেন”।
(ঘ) কবি
জীবনানন্দ দাশ কর্মজীবনে কী করতেন?
উত্তরঃ কবি জীবনানন্দ দাশ কর্মজীবনে ইংরাজী সাহিত্যের অধ্যাপনা করতেন।
(ঙ) “আবার আসিব
ফিরে” কবিতাটিতে কবি কোথায় ফিরে আসতে চেয়েছেন?
উত্তরঃ “আবার আসিব ফিরে” কবিতাটিতে কবি জীবনানন্দ দাশ তাঁর জন্মভূমিতে ফিরে
আসতে চেয়েছেন ।
(চ) কবি মৃত্যুর পর কীভাবে
জন্মভূমিতে ফিরে আসতে চান?
উত্তরঃ কবি মৃত্যুর পর শঙ্খচিল, শালিক, ভোরের কাক, হাঁস, সুদর্শন পাখি, লক্ষীপেঁচা অথবা সাদা বক এর বেশে জন্মভূমিতে ফিরে আসতে চান।
(ছ) কবিতাটিতে কোন নদীর কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ কবিতাটিতে
ধানসিড়ি নদীর কথা
বলা হয়েছে।
(জ) কবি কোন
জন্মে তাঁর পায়ে ঘুঙুর থাকবে বলেছেন?
উত্তরঃ কবি বলেছেন তিনি যখন হাঁস হয়ে জন্ম নেবেন তখন তাঁর পায়ে ঘুঙুর
থাকবে।
(ঝ)
লক্ষ্মীপেঁচা কোন গাছের ডালে ডাকে?
উত্তরঃ লক্ষ্মীপেঁচা শিমুল গাছের ডালে বসে ডাকে।
(ঞ) কবি কীভাবে কাঁঠাল ছায়ায় আসবেন বলে আশা করেন?
উত্তরঃ কবি যখন ভোরের কাক হবেন তখন
কুয়াশার বুকে কাঁঠাল ছায়ায়
আসবেন বলে আশা করেন।
৩। সংক্ষিপ্ত উত্তর সমর্থন:
(ক) কবি “জীবনানন্দ
দাশ” রচিত চারটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তরঃ কবি জীবনানন্দ দাশ রচিত চারটি কাব্যগ্রন্থের নাম হল —
ঝরা পালক,
ধূসর পাণ্ডুলিপি, রূপসী বাংলা ও
সাতটি তারার তিমির।
(খ) কবির কাব্যগুলোতে বিশেষত কী কী ভাবের আকর্ষণ বেশি দেখা যায়?
উত্তরঃ কবি
জীবনানন্দ দাশের কবিতায় প্রকৃতির প্রতি গভীর ভালবাসা ও
তার বিশ্লেষণ লক্ষ্য করা যায়। তিনি প্রকৃতির নানা উপাদান—বাতাস, আকাশ, নদী, পাহাড়—এগুলোকে
কবিতায় বিশেষভাবে ব্যবহার করেছেন, যেন প্রকৃতির মধ্যেই
তিনি মানব জীবনের গভীরতা ও রহস্য খুঁজে পান। যেমন "বনলতা সেন" কবিতায়
তিনি প্রকৃতির নানা দিককে উপমা হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তিনি প্রকৃতির মাঝে মানুষের
দুঃখ-কষ্ট, আশা, দুঃস্বপ্ন,
আনন্দ এসব অনুভূতির প্রতিফলন দেখতে পান এবং তা কবিতায় তুলে ধরেন।
(গ) কবির
জন্মভূমি বাংলার বিষয়ে লেখো।
উত্তরঃ কবি
জীবনানন্দ দাশের জন্মভূমি বাংলার
একটি বিশেষ স্থান, যা তাকে চিরকাল অনুপ্রেরণা
জুগিয়েছে এবং তার কবিতার মধ্যে গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। জীবনানন্দ দাশ ১৮৯৯
সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি, পশ্চিমবঙ্গের
বীরভূম জেলার কাঁটালি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
জীবনানন্দ দাশের কবিতায় বাংলার প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো
বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে। বিশেষত বাংলার গ্রামের দৃশ্য, নদী,
হাওড়া, শস্যভরা মাঠ, গাছপালা—এগুলো কবির কাব্যের অনবদ্য উপাদান। তার কাব্যে বাংলার মনোরম
পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য গভীরভাবে উদ্ভাসিত হয়েছে। তার কিছু কবিতায় বাংলার
গ্রামাঞ্চলের সাদাসিধা জীবন, গ্রামের মানুষের সহজ সরলতা
এবং তাদের সম্পর্কের মাধুর্যও উঠে এসেছে। এছাড়া
কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির
চিত্রও প্রাঞ্জলভাবে ফুটে উঠেছে। তিনি সমাজের তীব্র সঙ্কট এবং জীবনের অস্থিরতার
মধ্যেও বাংলার মানবিকতা এবং চিরন্তন ঐতিহ্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখেছেন। বাংলার
ইতিহাস,
লোকসংস্কৃতি এবং নানা ঐতিহ্য তার কবিতায় এক বিশেষ স্থান অধিকার
করেছে।
জীবনানন্দ দাশের
কবিতায় বাংলার ভূমিকা এক ধরনের আত্মকথন হিসেবে কাজ করেছে, যেখানে তিনি নিজেকে এবং তার কবিতার মাধ্যমে বাংলার জীবনযাত্রার গভীরতা
উপলব্ধি করেছেন। বাংলার প্রাকৃতিক দৃশ্যের মধ্যে কবি নিজের অস্তিত্ব এবং তার
অভ্যন্তরীণ দুঃখ-কষ্টের প্রতিফলন খুঁজে পেয়েছেন।
এছাড়া, তার কবিতায় বাংলা ভাষার প্রতি এক গভীর প্রেম এবং ভাষার মাধ্যমে মানবিক
অনুভূতি প্রকাশের একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। জীবনানন্দ দাশ ছিলেন বাংলার
প্রকৃতি ও সংস্কৃতির এক অমোঘ প্রমিক।
(ঘ) কবি পুনঃজন্মে বিশ্বাস করেন কী? এ বিষয়ে যা জান বর্ণনা করো।
উত্তরঃ কবি পুনঃজন্মে বিশ্বাস করেন।
কবিতাটির মূল ভাবনা হচ্ছে—কবি মৃত্যুর পরেও পৃথিবীতে ফিরে
আসতে চান,
যেন তিনি তার জন্মভুমিতে পুণরায় ফিরে আসেন এবং অসম্পূর্ণ
কাজ,
অভ্যন্তরীণ দুঃখ বা যন্ত্রণা পূর্ণ করতে পারেন। কবি পুনঃজন্ম ধারণার
মাধ্যমে জীবনের অবিচ্ছেদ্য চক্র এবং তার অবিরাম পুনঃঅবতার ধারণায় বিশ্বাস করেন বলে
মনে হয়, যদিও এখানে তিনি পুনঃজন্ম শব্দটি সরাসরি ব্যবহার করেন না।
কবিতায় কবি এই ধারণা দেন যে, মৃত্যুর
পর একজন ব্যক্তি যদি ফিরে আসতে পারে, তবে সে তার পুরানো
জীবন, অতীত এবং সৃষ্টির সঙ্গে নতুন করে মিলিত হতে পারবে।
এভাবে কবি পুনঃজন্ম
বা আত্মার অমরত্ব
নিয়ে সরাসরি কোনো ধর্মীয় বা তাত্ত্বিক বক্তব্য দেন না, বরং
তিনি একটি দার্শনিক ও
আধ্যাত্মিক ভাবনায় পুনঃজন্মের সম্ভাবনা এবং জীবনের চিরন্তন ধারাকে
তাঁর কবিতায় তুলে ধরেন।
(ঙ) কবি হাঁস
হয়ে পুনরায় জন্মগ্রহণ করতে চান কেন?
উত্তরঃ জীবনানন্দ দাশের "আবার আসিব ফিরে" কবিতাটিতে কবি বাংলার সজল শ্যামল প্রকৃতি ও সেই প্রকৃতির বুকের মানুষ ও পশুপাখিদের গভীরভাবে ভালোবাসে। এই সকলেই কবির প্রিয় তাই মৃত্যুর পর পুণরায় নিজের জন্মভূমিতে বিভিন্ন পশু পক্ষীদের রূপে ফিড়ে এসতে চেয়েছেন এবং সেই রূপের মধ্যে হাঁসও একটি রূপ যেরূপ তিনি খুব ভালোবাসেন এবং তাই কবি হাঁস হয়ে পুনরায় জন্মগ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, কারণ হাঁস একটি শান্ত, নিরীহ প্রাণী যা প্রাকৃতিক পরিবেশে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে, কলমীর গন্ধভরা পুকুরের জলে ভাসে থাকতে পারে। হাঁসের জীবন কবির কাছে এক ধরনের নিঃসঙ্গতা এবং মুক্তির প্রতীক হিসেবে দাঁড়ায়। কবি চায় এমন একটি জীবন যেখানে সে মানুষের জটিলতা, দুঃখ, কিংবা সম্পর্কের অশান্তি থেকে মুক্ত থাকবে। হাঁসের জীবনে কোনো দুর্বিষহতা নেই, বরং তা প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে চলতে পারে—এমন একটি সহজ, নির্ভাবনাময় জীবন কবি চেয়েছেন।
এই কবিতায়, কবি মানবজীবনের ক্ষণস্থায়ীত্ব এবং নিঃসঙ্গতার দিকে ইঙ্গিত করে, এবং হাঁসের মাধ্যমে প্রকৃতির শান্তিপূর্ণ জীবনকে চিত্রিত করেছেন, যা তাকে মানুষের জটিলতা থেকে মুক্তি এবং পুনরায় এক বিশুদ্ধ, সরল জীবনযাপন করার ইচ্ছা এনে দেয়।
(চ) নবান্ন উৎসব কী? এ বিষয়ে কী
জান লেখো।
উত্তরঃ নবান্ন
উৎসব একটি জনপ্রিয় বাংলা কৃষি উৎসব, যা মূলত
নতুন ধান তোলার আনন্দে উদযাপিত হয়। "নবান্ন" শব্দটি "নতুন
অন্ন" থেকে এসেছে, অর্থাৎ নতুন ধান কেটে তা দিয়ে
প্রথম পিঠা বা খাদ্য তৈরি করা এবং সে খাদ্য গ্রহণের প্রথা থেকেই এই উৎসবের উদ্ভব।
সাধারণত শীতকালে, বিশেষত পঁইত্রিশ থেকে চল্লিশ দিনের
মধ্যে, যখন নতুন ধান কাটা হয়, তখন
নবান্ন উৎসবটি উদযাপন করা হয়।
এই উৎসব মূলত কৃষক সমাজের মধ্যে প্রচলিত হলেও, এখন শহরেও এটি বিভিন্ন রকম আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হয়। নবান্নে ঘরে
ঘরে নতুন ধানের পিঠা, নানা ধরনের মিষ্টি এবং অন্যান্য
খাদ্য তৈরি করা হয়, যা আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। এছাড়া এই উৎসবের সঙ্গে
গ্রামের সামাজিক ঐক্যও জড়িত, কারণ এটি কৃষকদের জন্য এক
প্রকার শোষণমুক্ত ও আনন্দের সময়।
নবান্ন
উৎসবের মধ্যে বিশেষভাবে খাওয়া হয় বিভিন্ন ধরনের পিঠা, যেমন - কচুরি, সন্দেশ, রসগোল্লা, পুলি পিঠা, তেল পিঠা ইত্যাদি। এই সময়ে মানুষ একত্রিত হয়ে নৃত্য ও গান, বিশেষ করে লোকগীতি গেয়ে আনন্দ উপভোগ করে।
নবান্নের মাধ্যমে, কৃষকেরা
তাদের পরিশ্রমের ফলস্বরূপ অর্জিত নতুন শস্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায়, এবং প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এটি একটি প্রাচীন সংস্কৃতি,
যা মানুষের জীবনে প্রকৃতির সঙ্গে সাযুজ্য বজায় রাখার
প্রয়োজনীয়তার প্রতীক।
(ছ) “আমাকে পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে” — কথাটির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও ।
উত্তরঃ কবি জীবনানন্দ দাশের “আবার আসিব ফিরে” কবিতার আমাকে পাবে তুমি
ইহাদের ভিড়ে — এই লাইনটির মধ্যে কবি তাঁর আত্মার পুনর্জন্মের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ
করেছেন। এখানে “ইহাদের
ভিড়ে” শব্দটির মাধ্যমে কবি তার
পুনর্জন্মের পর সমাজের সাধারণ মানুষের
ভিড়ে অথবা শঙ্খচিল, শালিক, ভোরের কাক, হাঁস, সুদর্শন পাখি, লক্ষীপেঁচা অথবা সাদা বক, ইহাদের মধ্যে
মিশে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। অর্থাৎ, কবি
চাচ্ছেন তার অস্তিত্ব কোনো বিশেষ বা অনন্য স্থানে সীমাবদ্ধ না হয়ে।
এটি একটি গভীর ভাবনা, যেখানে
কবি তাঁর অতীতের একক অস্তিত্ব থেকে বেরিয়ে সমাজের অংশ হতে চাচ্ছেন, যেন তিনি তার আত্মাকে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখতে পান। এই লাইনটির
মধ্যে রয়েছে এক ধরনের আত্মবিশ্লেষণ এবং মানবতার প্রতি ভালোবাসা।
কবি এই লাইনটির মাধ্যমে বুঝাতে চাইছেন যে, তিনি আর কোনো আড়াল বা একা থাকতে চান না, বরং
সমাজের সঙ্গেই মিশে যেতে চান, মানুষের ভিড়ে থেকেও যেন
তার আত্মা সব সময় জীবন্ত এবং সক্রিয় থাকে।
৪। শূন্যস্থান পূরণ করো—
(ক) রূপসার ________ জলে হয়তো ________ এক শাদা ছেঁড়া পালে ________বায়।
উত্তরঃ রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক শাদা ছেঁড়া পালে ডিঙ্গা বায়।
(খ) শুনিবে এক _____ ডাকিতেছে ______ ডালে, হয়তো খইয়ের ধান ছড়াতেছে ______ শিশু এক
উঠানের ঘাসে।
উত্তরঃ শুনিবে এক লক্ষ্মীপেঁচা ডাকিতেছে শিমূলের ডালে, হয়তো খইয়ের ধান ছড়াতেছে শিশু এক উঠান ঘাসে।
(গ) আবার আসিব আমি ________ নদী মাঠ খেত ________,
________ ঢউয়ে ভেজা বাংলার এ ________ করুণ ________ ।
উত্তরঃ আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ খেত ভালোবেসে, জলাঙ্গীর ঢেউয়ে
ভেজা বাংলার এ সবুজ করুণ ডাঙ্গায় ।
৫। রচনাধর্মী উত্তর লেখো :
(ক) “এই
কার্তিকের নবান্নের দেশ” – এর
অন্তর্নিহিত প্রকাশ করো ।
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু কবি জীবনানন্দ দাশের রচিত “আবার আসিব ফিরে” নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। জীবনানন্দ
দাশের
"আবার আসিব ফিরে" কবিতার "এই কার্তিকের নবান্নের
দেশে" পঙক্তিটি বাংলার ঋতুবৈচিত্র্যের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গ্রামবাংলার ঐতিহ্য,
প্রকৃতি ও প্রাণের সমন্বিত এক গভীর অনুভূতি প্রকাশ করে। এই
পঙক্তির অন্তর্নিহিত অর্থ বিশ্লেষণ করতে গেলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো সামনে আসে:
কার্তিক মাস বাংলা কৃষিজীবী সমাজে এক গুরুত্বপূর্ণ সময়।
নবান্ন উৎসবের মাধ্যমে শস্য কাটার আনন্দ উদযাপন করা হয়। "কার্তিকের
নবান্ন" শুধু একটি সময় নয়, এটি গ্রামীণ জীবনের
শ্রম, ফলপ্রাপ্তি ও নবজীবনের প্রতীক। এখানে কবি
গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও শিকড়ের সঙ্গে তার আত্মিক সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন। "নবান্নের দেশ"
প্রকৃতির ঐশ্বর্য এবং মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির গভীর যোগসূত্রের কথা স্মরণ করিয়ে
দেয়। এই পঙক্তি থেকে বোঝা যায়, কবি শুধু নিজেকে নয়,
তার জন্মভূমির সঙ্গে জড়িত সমস্ত জীবনের সঙ্গেও পুনরায় মিলিত হতে
চান। "আবার
আসিব ফিরে" বলে কবি নিজের অস্তিত্বকে গ্রামবাংলার মাটির সঙ্গে একাত্ম করে
দেখেন। "কার্তিকের নবান্নের দেশে"র উল্লেখ কবির শিকড় ও প্রকৃতির কাছে
তার প্রত্যাবর্তনের আকাঙ্ক্ষাকে গভীরভাবে তুলে ধরে।
কার্তিকের নবান্নের দেশ বলতে বিশেষভাবে বাংলাদেশ বা গ্রাম – বাংলার কথাই বলা হয়েছে। কবি এই
গ্রাম – বাংলাকে গভীরভাবে ভালোবাসায় পরে এর বুকেই ফিরে আসতে চেয়েছেন। 'নবান্ন' গ্রাম বাংলার নতুন অন্ন গ্রহণের সময়। এই
সমগ্র হয় কার্তিক, অগ্রহায়ণে — যখন মাঠ থেকে নতুন শস্য ঘরে আসে। তখন সকলের মুখে খুশিতে ভড়ে যায়।
কার্তিকের নবান্ন শুধুমাত্র একটি ঋতু বা উৎসব নয়; এটি মানুষের জীবনচক্রের রূপক। কৃষকের শস্য উৎপাদনের প্রক্রিয়া যেমন
মাটির সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ককে প্রকাশ করে, তেমনই কবি
প্রকৃতির এই চিরন্তন চক্রের অংশ হতে চান। জীবনানন্দ দাশের কবিতায়
বাংলার প্রকৃতি সবসময় এক অনন্য সৌন্দর্যে উপস্থাপিত হয়। "নবান্নের দেশ"
এই গ্রামীণ জীবনের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সরলতাকে তুলে
ধরে, যা আধুনিকতাবাদী জীবন থেকে দূরে থাকা এক শান্তিপূর্ণ
স্থান হিসেবে প্রতিভাত হয়।
"এই কার্তিকের নবান্নের দেশে" শুধু একটি ভৌগোলিক বা ঋতুভিত্তিক বর্ণনা নয়, এটি কবির আত্মার সঙ্গে বাংলার প্রকৃতির অন্তর্নিহিত সংযোগের প্রকাশ। এটি তার চেতনায় বাংলার চিরায়ত রূপকে ধারণ করার আকাঙ্ক্ষা এবং পুনর্জন্মের মাধ্যমে সেই রূপে ফিরে আসার অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ।
(খ) “আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে” —কবি পুনরায় জন্মগ্রহণ করে কাদের ভিড়ে ফিরে আসতে চান বর্ণনা করো?
উত্তরঃ জীবনানন্দ দাশের
"আবার আসিব ফিরে" কবিতাটি এক অনন্য প্রাকৃতিক এবং
দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি বহন করে। এখানে কবি নিজের পুনর্জন্মের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ
করেছেন প্রকৃতির সঙ্গে গভীর সংযোগের মাধ্যমে। কবি জানেন যে মৃত্যুর পরে, পরজন্ম আছে। তাই তিনি
যদি পুনরায় জন্ম নেন, তবে এই বাংলার বুকেই যে কোনো প্রাণীরূপে জন্মগ্রহণ করতে
চেয়েছেন। সেইজন্য কবিতার “আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে”
পঙ্ক্তিতে কবি এমন এক ভিড়ের কথা উল্লেখ করেছেন, যা
সাধারণ মানুষ কিংবা সভ্যতার ব্যস্ততা নয়; বরং এটি
প্রকৃতির নিস্তরঙ্গ জীবন এবং গ্রামবাংলার অনন্য পরিবেশ। এই ভিড়ে রয়েছেন গাছপালা,
পশুপাখি, নদী, ধানক্ষেত,
রোদ-ছায়া এবং বাংলার প্রাকৃতিক রূপ।
কবি তাঁর পুনর্জন্মকে মানবজীবনের গণ্ডির বাইরে নিয়ে গিয়ে
প্রকৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখতে চান। এখানে “ইহাদের ভিড়ে” বলতে বোঝানো
হয়েছে পল্লির সাধারণ জীবনের সঙ্গে মিশে থাকা গ্রাম্য প্রকৃতির প্রাণবন্ত উপাদানগুলিকে।
কবি এমন এক জীবনের স্বপ্ন দেখেন যেখানে তিনি ধূলিমলিন শালিক, ধানের ক্ষেতে ঘাসফড়িং, শিমুল
গাছের ডাঁলে বসে থাকা লক্ষ্মীপেঁচা হয়ে হয়তো ধানসিড়ি নদীর তীরে ‘মানুষ’ অথবা বাংলার পাখি শঙ্খচিল, কলমী গন্ধে ভরা
পুকুরে জলে সাঁতার কাটা হাঁসে
রূপে হয়তো ভোড়ের কাক, শালিক, হয়তো বা ধবল বক কিংবা
শিশির ভেজা পলাশের পাতায় রূপান্তরিত হয়ে, বারবার
ফিরে আসবেন। কিংবা নাবিক হয়ে বাংলার নদীতে ডিঙা বাইতে আসবেন। কবির বিশ্বাস হয়তো বা বাংলার মাঠে, ঘাটে, বাটে,
জলাঙ্গীর ডাঙ্গায় বিভিন্ন প্রাণীদের ভিড়ে গোপনে মিশে থাকবেন।
এই পঙ্ক্তিটি প্রকৃতির প্রতি কবির গভীর ভালোবাসা, জীবনচক্রের প্রতি দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নিজেকে প্রকৃতির সঙ্গে
একাত্ম করার তীব্র আকাঙ্ক্ষাকে প্রকাশ করে। সভ্যতার কোলাহল থেকে দূরে, এই ভিড় প্রকৃতির নিভৃত শোভা এবং এর অন্তর্গত প্রাণময়তাকে প্রতীকীভাবে
তুলে ধরে।
তাই, জীবনানন্দ দাশ তাঁর
কবিতায় মানবসত্তাকে প্রকৃতির একটি অনন্য অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে জীবনের এক নতুন
রূপকল্প তুলে ধরেছেন, যেখানে তিনি চিরকাল প্রকৃতির সঙ্গে
মিশে থাকবেন।
(গ) কবিতাটির
সারাংশ সংক্ষেপে ব্যক্ত করো।
উত্তরঃ জীবনানন্দ
দাশের “আবার আসিব ফিরে” কবিতাটি বাংলা আধুনিক
কবিতার অন্যতম সৌন্দর্যে বিভোর।
কবি এখানে পুনর্জন্ম ও প্রকৃতির সঙ্গে গভীর আত্মিক সম্পর্কের চিত্রায়ণ করেছেন।
কবিতায় কবি মৃত্যুর পর আবার পৃথিবীতে ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন, তবে তখন মানবদেহে আসা
যদি সম্ভব নাও হয় তবে প্রকৃতির অংশ হয়ে—হয়তো
শ্যামল বাংলার কোনো ধানক্ষেতের বাতাস, নদীর জল,
অথবা পথের ধারের কোনো গ্রামীণ গাছপালা হয়ে, কিংবা শিমুল
গাছের ডাঁলে বসে থাকা লক্ষ্মীপেঁচা হয়ে হয়তো ধানসিড়ি নদীর তীরে ‘মানুষ’ অথবা বাংলার পাখি শঙ্খচিল, কলমী গন্ধে ভরা
পুকুরে জলে সাঁতার কাটা হাঁসে
রূপে হয়তো ভোড়ের কাক, শালিক, হয়তো বা ধবল বক কিংবা
শিশির ভেজা পলাশের পাতায় রূপান্তরিত হয়ে, বারবার
ফিরে আসবেন। কিংবা নাবিক হয়ে বাংলার নদীতে ডিঙা বাইতে আসবেন। কবির বিশ্বাস হয়তো বা বাংলার মাঠে, ঘাটে, বাটে,
জলাঙ্গীর ডাঙ্গায় বিভিন্ন প্রাণীদের ভিড়ে গোপনে মিশে থাকবেন।
এই কবিতায় মৃত্যু কোনো ভয়ের বিষয় নয়; বরং এটি নতুন রূপে প্রকৃতিতে ফিরে আসার একটি সুযোগ। কবি বাংলার
প্রকৃতিকে গভীর ভালোবাসায় ধারণ করেছেন এবং সেখানে শুদ্ধতর জীবনের সন্ধান করেছেন।
তাঁর এই পুনর্জন্মের ইচ্ছায় কোনো ভোগবাদী আকাঙ্ক্ষা নেই, বরং
প্রকৃতির শান্ত, নির্মল, নিস্তব্ধ
সৌন্দর্যের মধ্যে চিরন্তন উপস্থিতির স্বপ্ন আছে। কবি তাঁর সমগ্র এক কবিমানসে ফুঠে উঠেছে। কবি তাঁর সমগ্র সত্তা, সমগ্র চেতনা ও সমগ্র ব্যক্তিবোধের
সমন্বয় খুঁজেছেন এই বাংলায়। অত্যন্ত গভীর ও আত্মলীন তাঁর সন্ধান। পাঠ্য কবিতায় এক
চিত্ররূপময় বাংলার সৌন্দর্য প্রকাশিত হয়েছে। কবির ব্যক্তিসত্তার অভিনব প্রকাশ
ঘটেছে এই কবিতায়। তিনি বর্তমান জীবন এবং পরজন্মের এক সমন্বয় স্থাপন করতে চেয়েছেন
কবিতায়।
কবিতাটিতে প্রকৃতি ও জীবনবোধের যে ধ্যানী রূপ ফুটে উঠেছে, তা বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য মাধুর্যের সৃষ্টি করেছে। কবির কল্পনা
মৃত্যুর মধ্যেও এক আশাবাদের বার্তা দেয়—যেখানে সবকিছু শেষ হয়ে যায় না; বরং প্রকৃতির চিরচক্রে নতুন রূপে ফিরে আসে।
(ঘ) “আবার আসিব
ফিরে” —কবিতার নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
উত্তরঃ “আবার আসিব ফিরে ” কবিতাটি কবিতা জীবনানন্দ দাশের রচিত “রূপসী বাংলা” নামক
কাব্যগ্রন্ত থেকে নেওয়া হয়েছে। কবি
জীবনানন্দ দাশের কবিতা "আবার আসিব ফিরে"
নামকরণের সার্থকতা রচনাধর্মীতার আলোকে বিচার করতে গেলে কবির ভাবধারা, প্রকৃতিপ্রীতি, জীবনদর্শন এবং মানবজীবনের
চক্রবৎ প্রবাহকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হয়। "আবার আসিব
ফিরে" শিরোনামটি প্রত্যাবর্তনের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। কবি এখানে জীবনের
সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে প্রকৃতির মাঝে এক অনন্ত অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার প্রত্যাশা
ব্যক্ত করেছেন। শিরোনামের 'আবার' শব্দটি কবির চিরন্তন প্রকৃতি ও জীবন-চেতনার প্রতীক। কবিতায় কবি নিজেকে
প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে কল্পনা করেছেন। তিনি ধানসিঁড়ি নদী, বাংলার মেঠোপথ, সবুজ ক্ষেত এবং শস্য-সন্ধ্যার
চিত্রায়ণ করেছেন। "আবার আসিব ফিরে" বলে তিনি বাংলার গ্রামীণ প্রকৃতির
মাঝে বারবার ফিরে আসতে চান।
কবিতায় কবি এক
অন্তর্নিহিত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করেন যে তিনি মৃত্যুর পরও বাংলার প্রাকৃতিক
রূপে ফিরে আসবেন। তার এই প্রত্যাবর্তনের আকাঙ্ক্ষা জীবনের চিরন্তনতার ধারণাকে
প্রকাশ করে।কবি বাংলার প্রকৃতির প্রতি এক গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। শালিক,
শ্যামল মাটি, ধানক্ষেত — এ সবই কবির মনে
স্থান পেয়েছে। মৃত্যুর পরও এসবের মধ্য দিয়ে ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা নামকরণের সার্থকতা
প্রমাণ করে।এই কবিতা বাঙালির মাটির প্রতি টান এবং স্মৃতির প্রতি আকর্ষণের
প্রতিনিধিত্ব করে। কবির ভাবনায় মৃত্যুকে কোনো শেষ নয়, বরং
নতুন এক পথযাত্রা হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।
আবার আসিব ফিরে” শুধু কবির ব্যক্তিগত ইচ্ছা নয়, বরং মানুষ ও প্রকৃতির চিরন্তন চক্রের একটি প্রতীক। এটি জন্ম-মৃত্যু ও
পুনর্জন্মের ধারার প্রতি এক গভীর আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত দেয়।
কবিতার ভাবধারা জীবনের সাময়িকতাকে মেনে নিয়ে প্রকৃতির
চিরন্তন রূপে স্থায়ী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। কবি মৃত্যুর পরেও ধানের দেশের
প্রকৃতিতে ফিরে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। জীবনানন্দ দাশের কবিতায় 'পুনর্জন্ম' একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কবিতায়
তিনি বিশ্বাস করেন, মৃত্যু কোনো শেষ নয়; বরং নতুন রূপে ফিরে আসার সম্ভাবনা। "আবার আসিব ফিরে"
শিরোনামটি সেই বিশ্বাসেরই প্রতিফলন।
কবিতার রচনাশৈলীতে নান্দনিকতার গভীর ছোঁয়া রয়েছে। প্রকৃতির
সৌন্দর্য আর কবির আত্মজিজ্ঞাসা মিলেমিশে এক স্বপ্নময় জগৎ তৈরি করে। নামটি সেই
শান্তিপূর্ণ, অনন্ত যাত্রার প্রতীক।
"আবার আসিব ফিরে" শিরোনামটি শুধু একটি কবিতার নাম নয়; এটি জীবনানন্দ দাশের জীবনদর্শন ও প্রকৃতিচেতনার গভীর প্রকাশ। প্রকৃতির
সঙ্গে একাত্ম হওয়ার আকাঙ্ক্ষা এবং পুনর্জন্মের বিশ্বাস এই নামকরণকে যথার্থ ও
সার্থক করেছে। কবিতার নামকরণ তার মূল বক্তব্যকে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে প্রকাশ করে।
কবি জীবনানন্দ দাশ শুধু বাংলার প্রকৃতিতে নয়, বাঙালির
চেতনায়ও চিরকাল ফিরে আসবেন — এটাই এই নামকরণের সার্থকতা।
৬। ব্যাখ্যা লেখো:
(ক) “ভোরের কাক
হয়ে এই নবান্নের দেশে”।
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটুকু কবি জীবনানন্দ
দাশের রচিত
“আবার আসিব ফিরে” কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে, এখানে
কবি বাঙালির চিরচেনা প্রকৃতির সঙ্গে নিজের পুনর্জন্মের বাসনা প্রকাশ করেছেন।
লাইনটি “ভোরের কাক হয়ে এই নবান্নের দেশে” প্রতীকী ও গভীর অর্থবহ। ভোরের কাক বাংলার গ্রাম্য
জীবনের একটি চিরন্তন উপাদান। এটি প্রভাতের আগমনী বার্তা বহন করে। ভোরের কাকের ডাক
নতুন দিনের সূচনা নির্দেশ করে, যা পুনর্জন্ম বা নতুন
জীবনপ্রাপ্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। নবান্ন শব্দের অর্থ নতুন
ফসলের উৎসব। এটি বাংলার কৃষি ও গ্রামীণ জীবনের একটি আনন্দঘন সময়। নবান্নের দেশ
বলতে কবি বাংলার উর্বর প্রাকৃতিক ভূমির কথা বুঝিয়েছেন, যেখানে প্রকৃতি ও সংস্কৃতি মিলে বেঁচে থাকার আনন্দ প্রকাশিত হয়।
কবিতায় কবি মৃত্যুর পর আবার নিজের জন্মভূমিতে বিভিন্ন প্রাণীর রূপে
ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন, যার মধ্যে তিনি ভোরের কাক হয়ে নবান্নের সময় আসবেন বলে
আশা করেন।
এই লাইনটিতে কবি বাংলার প্রকৃতিতে মিশে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা
ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন, মৃত্যুর
পরও তিনি বাংলার এই চিরন্তন প্রকৃতির অংশ হয়ে ফিরে আসবেন—ভোরের কাকের ডাক কিংবা
নবান্নের আবহে। সারসংক্ষেপে, এটি কবির চিরন্তন বাংলার প্রতি গভীর প্রেম ও আত্মিক সম্পর্কের
অভিব্যক্তি।
(খ)“বাংলার
নদী মাঠ খেত ভালোবেসে”।
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটুকু কবি জীবনানন্দ
দাশের রচিত
“আবার আসিব ফিরে” কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে, এই
লাইনে কবি তাঁর গভীর দেশপ্রেম এবং বাংলার প্রকৃতির প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা ব্যক্ত
করেছেন। বাংলার ভূপ্রকৃতি মূলত নদী, মাঠ এবং
খেত দ্বারা অলঙ্কৃত। এই তিনটি উপাদান বাংলার গ্রামীণ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই
“নদী মাঠ খেত” বলতে কবি এক অর্থে পুরো বাংলাকেই বুঝিয়েছেন।
বাংলার নদীগুলি তার জনজীবন ও কৃষিকাজে বিশেষ ভূমিকা পালন
করে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনার
মতো নদীসমূহ শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্যের আধার নয় বরং মানুষের জীবিকার মূল ভিত্তিও।
কবি এই নদীগুলোর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যমে প্রকৃতির প্রাণময়তা ও সজীবতাকে
উপলব্ধি করেছেন।
বাংলার বিস্তৃত সবুজ মাঠ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম
দৃষ্টান্ত। মাঠ মানেই গ্রামীণ বাংলার জীবনধারা, যেখানে
মানুষ চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এসব মাঠ বাংলার সাধারণ মানুষের পরিশ্রম ও
আনন্দের প্রতীক। কবিতায়
কবি মৃত্যুর পর পুনরায়
নিজের জন্মভূমিতে বিভিন্ন প্রাণীর
রূপে ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন, যেখানে তিনি এই বাংলার নদী মাঠ খেত
ইত্যাদিতে মিশে থাকবেন বলে আঁশা করেছেন ।
খেত বা ক্ষেত বাংলার কৃষিজীবী সমাজের প্রধান উপাদান। ধান, পাট এবং অন্যান্য ফসল বাংলার অর্থনীতির মেরুদণ্ড। কবি এই খেতগুলিকে
ভালোবেসে বাংলার অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন।
এই লাইনটি কবির বাংলার প্রকৃতির প্রতি এমন ভালোবাসা প্রকাশ
করে যা মৃত্যুর পরও ফুরিয়ে যায় না। কবি চান মৃত্যুর পর পুনর্জন্ম নিয়ে আবার এই
প্রিয় বাংলার বুকে ফিরে আসতে। তাঁর এই আকাঙ্ক্ষা বাংলা মাটির প্রতি গভীর মমত্ববোধ
এবং মানব-প্রকৃতির চিরন্তন সম্পর্কের দ্যোতক। এই ভালোবাসা কেবল স্থানীয়
সীমারেখায় আবদ্ধ নয়, বরং তা মানব অস্তিত্ব ও
প্রকৃতির মাঝে চিরন্তন যোগসূত্রের প্রকাশ।
(গ) “আমারেই পাবে তুমি ইহাদের
ভিড়ে”।
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটুকু কবি জীবনানন্দ দাশের রচিত
সুপরিচিত কবিতা “আবার আসিব ফিরে” থেকে নেওয়া হয়েছে। কবি
জীবনানন্দ দাশ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রতিভাবান আধুনিক কবি। তাঁর কবিতা “আবার
আসিব ফিরে” প্রকৃতি ও জীবনচেতনার এক অনন্য মেলবন্ধন। কবিতাটির উল্লেখিত লাইন
"আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে" কবির পুনর্জন্ম ও চিরন্তন আত্মপরিচয়ের
অনুভূতির একটি গভীর প্রতিফলন। এ
লাইনটি কবির আত্মার অমরত্বের প্রতীক। কবি প্রকৃতির সঙ্গে এমন একাত্ম হয়ে গেছেন যে
মৃত্যুর পরও তিনি এই প্রকৃতি, পাখি, গাছপালা, নদী ও বাংলার মাটির মাঝে নিজেকে
অবিনশ্বর রূপে দেখতে চান। তিনি বিশ্বাস করেন, তাঁর
অস্তিত্ব প্রকৃতির প্রতিটি উপাদানে মিশে থাকবে। এইভাবেই তিনি ফিরে আসবেন বাংলার
ঐতিহ্যবাহী প্রকৃতির ভিড়ে। 'ইহাদের ভিড়ে' বলতে কবি বাংলার সাধারণ
জনজীবনের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। সাধারণ মানুষ, জীবনযাত্রা
ও প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে মিশে থাকা একটি পরিচিত সত্ত্বা হিসেবে কবি তাঁর
অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবেন। এ যেন কবির আত্মপরিচয়ের এক বৃহত্তর মানবিক ও সাংস্কৃতিক
উপলব্ধি।
কবি তাঁর পুনর্জন্মকে মানবজীবনের গণ্ডির বাইরে নিয়ে গিয়ে
প্রকৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখতে চান। এখানে “ইহাদের ভিড়ে” বলতে বোঝানো
হয়েছে পল্লির সাধারণ জীবনের সঙ্গে মিশে থাকা গ্রাম্য প্রকৃতির প্রাণবন্ত উপাদানগুলিকে।
কবি এমন এক জীবনের স্বপ্ন দেখেন যেখানে তিনি ধূলিমলিন শালিক, ধানের ক্ষেতে ঘাসফড়িং, শিমুল
গাছের ডাঁলে বসে থাকা লক্ষ্মীপেঁচা হয়ে হয়তো ধানসিড়ি নদীর তীরে ‘মানুষ’ অথবা বাংলার পাখি শঙ্খচিল, কলমী গন্ধে ভরা
পুকুরে জলে সাঁতার কাটা হাঁসে
রূপে হয়তো ভোড়ের কাক, শালিক, হয়তো বা ধবল বক কিংবা
শিশির ভেজা পলাশের পাতায় রূপান্তরিত হয়ে, বারবার
ফিরে আসবেন। কিংবা নাবিক হয়ে বাংলার নদীতে ডিঙা বাইতে আসবেন। কবির বিশ্বাস হয়তো বা বাংলার মাঠে, ঘাটে, বাটে,
জলাঙ্গীর ডাঙ্গায় বিভিন্ন প্রাণীদের ভিড়ে গোপনে মিশে থাকবেন।
জীবনানন্দ দাশের কবিতায় পুনর্জন্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এই লাইন থেকে প্রতীয়মান হয় যে তিনি মৃত্যুকে একটি শেষ নয়, বরং একটি রূপান্তর হিসেবে দেখছেন। কবি প্রকৃতির চিরন্তন চলমানতার অংশ
হিসেবে নিজেকে দেখতে চান। তাঁর এই প্রত্যাবর্তন স্বপ্নময়, তবে বাস্তবতার সঙ্গেও সম্পর্কযুক্ত।
“আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে” লাইনটি কবি জীবনানন্দ দাশের
মৃত্যুচেতনা, প্রকৃতিপ্রেম এবং পুনর্জন্মের ধারণার
প্রতীকী বহিঃপ্রকাশ। কবি তাঁর জীবনের অন্তিম পরিণতিকে মেনে নিয়েও প্রকৃতির মাঝে এক
নতুন সত্তায় নিজেকে কল্পনা করেছেন। এটি বাংলা সাহিত্যে প্রকৃতি ও ব্যক্তিত্বের এক
অপূর্ব মেলবন্ধনের উদাহরণ।
: টীকা লেখো :
সুদর্শন: দেখতে
খুব সুন্দর এক প্রকার পাখি অথবা আকাশে উড়ন্ত ঘুড়ি, ফড়িং বা কাঁচপোকা জাতীয় এ প্রকার পতঙ্গ। "সুদর্শন"
বলতে সাধারণত এমন পাখিকে বোঝানো হয় যার রূপ, রঙ এবং
সৌন্দর্য দৃষ্টিনন্দন ও মনোহর। প্রকৃতিতে বিভিন্ন পাখি তাদের বাহারি পালক, আকর্ষণীয় চেহারা এবং উজ্জ্বল বর্ণের জন্য "সুদর্শন পাখি"
নামে পরিচিত।
নবান্ন উৎসব: বাংলাদেশের
এক প্রকার কৃষি-উৎসব। কার্তিক
মাস বাংলা কৃষিজীবী সমাজে এক গুরুত্বপূর্ণ সময়। নবান্ন উৎসবের মাধ্যমে শস্য কাটার
আনন্দ উদযাপন করা হয়। গ্রামের মানুষ
এই উৎসব পালন করে। হেমন্তকালে বাংলার কৃষকরা আমন ধান কাটার পর এই উৎসবের আয়োজন
করে। তাতে আত্মীয়পরিজন ও প্রতিবেশীরা অংশ গ্রহণ করে। সাধারণত অঘ্রান মাসে এই উৎসব
পালিত হয়। উৎসবে সমাগত আত্মীয়বর্গকে নতুন চালের ভাত ও নতুন গুড়ের মিষ্টান্ন
পরিবেশন করা হয়। "কার্তিকের
নবান্ন" শুধু একটি সময় নয়, এটি গ্রামীণ জীবনের
শ্রম, ফলপ্রাপ্তি ও নবজীবনের প্রতীক।
নিজে টীকা লেখো:
জীবনানন্দ দাশ: জীবনানন্দ
দাশ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম আধুনিক কবি ও শিল্পী। তিনি ১৮৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি
বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সত্যানন্দ দাশ এবং মাতা কুসুমকুমারী দাশ দুজনেই
সাহিত্য অনুরাগী ছিলেন। জীবনানন্দ
দাশ বাংলা কবিতায় প্রকৃতির চিত্রায়ণ ও মানবজীবনের গভীর দর্শনের জন্য পরিচিত। তাঁর
কাব্যে প্রকৃতি, নিসর্গ, ঐতিহ্য,
প্রেম, মৃত্যু এবং সময়ের অনন্ত ধারা
নিয়ে গভীর ভাবনা প্রকাশ পেয়েছে। কবি 'ধূসর পাণ্ডুলিপি',
'বনলতা সেন', 'মহাপৃথিবী', 'রূপসী বাংলা' প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে
বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। তাঁর
রচিত 'বনলতা সেন' আধুনিক
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ। তাঁর
কবিতায় বাংলার গ্রাম, নদী, গাছপালা, পাখি বারবার উঠে এসেছে। জীবনানন্দ
ছিলেন নিঃসঙ্গতার কবি। তাঁর কাব্যে মৃত্যুচেতনা এবং জীবনদর্শনের এক গভীর অনুভব ধরা
পড়ে।আবার আসিব ফিরে’ কবিতায় দেখা যায় কবি মৃত্যুর পরও প্রকৃতির মাঝে নিজেকে মিশিয়ে
থাকার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।জীবনানন্দ দাশ ১৯৫৪ সালের ২২ অক্টোবর কলকাতায় এক
ট্রাম দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
জীবনানন্দ দাশ বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার জনক হিসেবে
চিহ্নিত। তাঁর কাব্যে প্রকৃতিপ্রেম, মানবিকতা
এবং আত্মার গভীর অন্বেষণ আজও বাংলা কবিতাপ্রেমীদের অনুপ্রাণিত করে।
জলাঙ্গী: "জলাঙ্গী"
শব্দটি নিজেই এক গভীর অর্থ বহন করে। 'জল' এবং 'আঙ্গী' শব্দ
দুটি মিলিয়ে এখানে তৈরি হয়েছে এমন এক চিত্র, যেখানে জল
এবং প্রকৃতির অন্তর্নিহিত সম্পর্ক প্রতিফলিত হয়েছে। জলাঙ্গী শব্দটি মানুষের দুঃখ,
যন্ত্রণা, এবং প্রকৃতির বৈরিতার প্রতীক
হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। কবিতাটির মধ্যে জলাশয় বা নদী নিয়ে যে উদ্বেগ বা মূর্ছনা
পাওয়া যায়, তা আমাদের অস্তিত্বের অন্তর্নিহিত শূন্যতা ও
অনিশ্চয়তা সম্পর্কে ভাবায়।
কবিতায় জল, আকাশ,
নদী, এবং প্রকৃতির অন্যান্য উপাদানের
মাধ্যমে কবি মানুষের জীবনকে প্রকাশ করেছেন। কবি প্রকৃতির মাধ্যমে জীবনের অসীমতা,
তার ক্ষণস্থায়ীতা, এবং তার মধ্যে লুকিয়ে
থাকা অনন্ততার সুরঙ্গটি দেখাতে চেয়েছেন।
ধানসিড়ি: এটি শুধুমাত্র একটি নদী নয়, বরং কবির মনস্তত্ত্বের প্রতীক। নদীটি জীবনের প্রবাহ, অস্থিরতা ও পরিবর্তনের চিহ্ন হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে। নদীর জলে যেমন
ধারা এবং প্রবাহ রয়েছে, তেমনি জীবনের প্রভাবও অপ্রত্যাশিত
এবং স্রোতের মতো এগিয়ে চলে। কবি এখানে প্রকৃতির মাঝে নিজেকে খুঁজে পান। ধানসিড়ি
নদী ও তার আশপাশের প্রকৃতি কবির মানসিক অবস্থা ও গভীর চেতনাকে ফুটিয়ে তোলে। কবি
প্রকৃতির মধ্য দিয়ে জীবনের অনিশ্চয়তা, দুঃখ, প্রেম, এবং আত্মজিজ্ঞাসার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। নদী
ও তার পরিবেশ কবির নিজস্ব মানসিক অবস্থা বা একাকীত্বের প্রতীক হিসেবে উঠে এসেছে।
লক্ষ্মীপেঁচা: "লক্ষ্মীপেঁচা"—একটি রাত্রির পাখি যা আধ্যাত্মিক ও রহস্যময় আভা
ধারণ করে। এটি একদিকে যেমন শুভ্রতা ও সৌন্দর্যের প্রতীক, তেমনি
অন্যদিকে এক রাত্রি পরিবেশের সঙ্গে যুক্ত আতঙ্ক এবং অস্পষ্টতার প্রতীকও হতে পারে।
কবিতার মাধ্যমে কবি একটি আধুনিক মানুষকে প্রতিফলিত করেছেন, যিনি সমাজের অন্ধকার, ভয়, হতাশা, এবং আধ্যাত্মিক বিষণ্নতার মধ্যে বাস
করছেন। লক্ষ্মীপেঁচা বরাবরই আমাদের সংস্কৃতিতে অশুভ বা অশান্তির প্রতীক হিসেবে
চিহ্নিত হয়ে এসেছে। কিন্তু জীবনানন্দ দাশ তার কবিতায় লক্ষ্মীপেঁচাকে এক নতুন
আঙ্গিকে তুলে ধরেছেন। এখানে এটি শুধু অশুভ নয়, বরং একটি
বড় অস্তিত্বের আবিষ্কারও হতে পারে—যা একটি নতুন আধ্যাত্মিক জগতের সূচনা বা আধুনিক
মানুষের সংকটকে বুঝায়।
৭. ব্যাকরণ :
(ক) পদ পরিবর্তন করো ।
উত্তরঃ করুণ —কারুণ্য,
সন্ধ্যা — সান্ধ্য,
মানুষ
— মনুষ্যত্ব,
মাঠ —
মেঠো,
নিজে করো —
জল, শিশু,
শাদা, কিশোর, নাশ, অন্তর, আদি, সময়।
উত্তরঃ জল — জলীয় (বিশেষণ),
শিশু —
শৈশব (বিশেষ্য),
শাদা —
শাদাপনা (বিশেষ্য),
কিশোর
– কিশোরত্ব (বিশেষ্য),
নাশ —
নাশকতা (বিশেষ্য),
অন্তর—
অন্তরিক (বিশেষণ),
সময়—
সাময়িক (বিশেষণ)।
(খ) সরল, জটিল ও যৌগিক বাক্য কাকে বলে? উদাহরণ সহ
লেখো ।
উত্তরঃ
১) সরল বাক্য — যে
সকল বাক্য একটিমাত্র উদ্দেশ্য ও একটি বিধয়ে নিয়ে গঠিত হয় তাদের বলা
হয় সরল বাক্য অর্থাৎ সরল বাক্য এমন একটি বাক্য, যেখানে একটি মাত্র ক্রিয়া বা কর্মের ধারণা প্রকাশিত হয়।
যেমন — আমি ভাত খেয়েছি। বাবা দিল্লি গিয়েছেন। মিথ্যাবাদী
রামকে সকলে ঘৃণা করে। আমি স্কুলে যাচ্ছি।
সে বই পড়ছে। তারা বাজারে গেছে।
২) জটিল বাক্য — যে বাক্যে পরস্পরের উপর একাধিক নির্ভরশীল উপাধান বাক্য থাকে তাকে জটিল বাক্য বলে অর্থাৎ
জটিল বাক্য এমন একটি বাক্য,
যেখানে দুটি বা তার বেশি সম্পর্কিত বাক্যে থাকে।
যেমন —
i. আমি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে তুমি এমন
একটি আকাট মিথ্যেকথা
বলবে।
ii. যদিও লোকটি যথেষ্ট বিদ্বান তবুও সে
ভীরু।
iii. যে ব্যক্তি পরের উপকার করে সে কখনও প্রতিদানের আশা
করে না।
iv. আমি জানি যে, তুমি ভালো গান গাও।
v. যখন আমি ঘুমাচ্ছি,
সে পড়াশোনা করছে।
vi. তুমি যদি এসে থাকো,
তবে আমরা খেতে যাবো।
৩) যৌগিক বাক্য — একাধিক সরলবাক্য যখন অব্যয় পদ দ্বারা যুক্ত হয়ে একটি পূর্ণ বাক্য গঠন করে তখন তাকে যৌগিক বাক্য বলে। এই সরলবাক্য গুলো সমন্বয়কারী যুক্তিহীন দ্বারা যুক্ত থাকে, যেমন: "এবং", "অথবা", "কিন্তু", "তবে" ইত্যাদি। যেমন—
i. বিধান এখানে এসেছিল কিন্তু আমি তাকে দেখিনি।
ii. সে কোনো দোষ
করেনি তাবু তার শাস্তি হল।
iii. অভয় যখন পেয়েছি
অতএব সত্য কথাটাই বলব।
iv. সে গান
গায়, আর আমি নাচি।
v. সে খুশি,
তবে আমি দুঃখিত।
নিজে করো –
সরল, জটিল এবং যৌগিক বাক্যের আরও তিনটি করে বাক্য নিজে তৈরি করো।
উত্তর: নিচে আমি সরল, জটিল এবং যৌগিক বাক্যের তিনটি করে উদাহরণ দিয়েছি:
১. সরল বাক্য (Simple
Sentence):
আমি পানি খাচ্ছি।
সে স্কুলে যাচ্ছে।
তারা খেলতে যাচ্ছে।
২. জটিল বাক্য (Complex Sentence):
আমি জানি, তুমি ভালো ছাত্র।
যখন আমি
ঘুমাচ্ছি, তখন সে গান গাইছিল।
তুমি যদি সময় পাও, আমাকে ফোন দিও।
৩. যৌগিক বাক্য (Compound Sentence):
আমি সিনেমা দেখবো, কিন্তু তুমি কি আসবে ?
সে সুন্দর গান গায়, আর আমি নাচি।
তারা মাঠে খেলছে, কিন্তু আমি বাড়িতে আছি।
(গ) এক কথায়
প্রকাশ করো (বাক্য সংকোচন) ।
যা
জানার যোগ্য বা জানতে হবে — জ্ঞাতব্য।
যা কখনও ভাবা
যায় না — অভাবনীয়।
পতিপুত্রহীনা নারী — অবীরা।
যিনি কম কথা বলেন — মিতভাষী, স্বল্পবাক।
পক্ষীর কলরব
— কূজন।
ময়ূরের
ডাক — কেকা।
নিজে করো:
একই মায়ের
পুত্র,
মানুষের হাড়, যিনি দ্বার
পরিগ্রহ করেন নাই, ভোজন করবার
ইচ্ছা, যে নারীর
সম্প্রতি বিবাহ হয়েছে, যাহার দু'হাত সমানে
চলে,
বিচলিত মন
যার,
যে বস্তু পেতে ইচ্ছা করা যায়, রাত্রিকালীন যুদ্ধ, রক্তবর্ণপদ্ম, কুমারীর পুত্র, বিষ্ণুর গদা, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শঙ্খ, হস্তীর
শাবক, হাতী বাঁধার স্থান।
উত্তরঃ একই মায়ের ছেলে — ভ্রাতা।
মানুষের হাড় — অস্থি।
যিনি দ্বার
পরিগ্রহ করেন নাই — নির্বাসিত।
ভোজন করবার ইচ্ছা — ক্ষুধা।
যে নারীর বর্তমান হয়েছে — নববধূ।
যাহার দু'হাত দাঁড় করা — সব্যসাচি।
বিচলিত মন যার — অস্থির।
যে বস্তু পেতে
ইচ্ছা করা যায় - বাসনা।
রাত্রিকালীন
যুদ্ধ - রজনীকালীন সংগ্রাম।
রক্তবর্ণপদ্ম — কোকনদ, কমল।
কুমারীর পুত্র -
যুবক।
বিষ্ণুর গদা — কৌমোদকী।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শঙ্খ — পাঞ্চজন্য।
হস্তীর শাবক — হস্তীশাবক।
হাতি বাঁধার স্থান — বারী।
Note for Users
If you find any incorrect answers, please notify us via Instagram at @pipalacademy or email us at info@pipalacademy.com. For content that may infringe copyright, kindly refrain from copying our content. Thank you for supporting Digital Pipal Academy!
যদি আপনি কোনো ভুল উত্তর পান, অনুগ্রহ করে আমাদের @pipalacademy ইনস্টাগ্রামে জানাবেন অথবা info@pipalacademy.com ইমেইলের মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। কপিরাইট লঙ্ঘন করতে পারে এমন বিষয়বস্তুর জন্য, আমাদের বিষয়বস্তু কপি করা থেকে বিরত থাকুন। ডিজিটাল পিপাল একাডেমিকে সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ!
Join Our WhatsApp GroupSudev Chandra Das (B.Sc. Mathematics)
Hi! I'm Sudev Chandra Das, Founder of Digital Pipal Academy. I've dedicated myself to guiding students toward better education. I believe, 'Success comes from preparation, hard work, and learning from failure.' Let’s embark on a journey of growth and digital excellence together!.
For any queries, feel free to reach us at info@pipalacademy.com.